The Magical Fairy Tale of the Enchanted Forest

fairy tale story in bangla  

fairy tale story in bangla

ধাপ ১: গ্রামের হালু মোল্লা আর গোপালের প্রথম দেখা

বাংলার এক ছোট্ট গ্রাম পাথরঘাটা। এখানে বসবাস করত হালু মোল্লা নামে এক অদ্ভুত লোক। গ্রামের সবাই জানত, মোল্লা সাহেবের মুখ যত মিষ্টি, মনের ভেতর তত চালাকি। তিনি গ্রামের লোকদের ছোটখাটো কাজে সাহায্য করার নাম করে প্রায়ই কিছু না কিছু ঠকবাজি করতেন। কেউ ডিম আনলে বলতেন একটা ভাঙা ছিল, তাই দাম কমাও। কেউ মাছ আনলে বলতেন এই মাছ তো বোঁটা গেছে। এমন চালাকি করে প্রতিদিনের বাজারে এক টাকা বাঁচাতে পারলেই তিনি খুশি।

অন্যদিকে, একই গ্রামে গোপাল নামে এক বুদ্ধিমান ছেলে ছিল। গরিব ঘরের ছেলে, কিন্তু মুখের কথা এমন রসালো যে গ্রামের সবাই হাসিতে কুটিকুটি হতো। গোপাল একদিন ঠিক করল, এই হালু মোল্লার চালাকি বন্ধ করবে, তবে মোল্লাকে হাসিয়েই শিক্ষা দেবে।

এক সকালে গোপাল দেখল হালু মোল্লা বাজারে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছে আজ আমি ফ্রি তেল দেব, যে আমার ধাঁধার উত্তর দিতে পারবে! গ্রামের লোকেরা জড়ো হলো। ধাঁধা ছিল, যে জিনিস শুকায়েও ভিজে, ভিজলেও শুকায়, সেটা কী? সবাই মাথা চুলকায়, কেউ পারে না।

গোপাল তখন মুচকি হেসে বলল, মোল্লা, উত্তর হলো তোয়ালে! সবাই হাততালি দেয়। মোল্লা মুখ নিচু করে ফ্রি তেল দিতে বাধ্য হয়।

এভাবেই শুরু হলো গোপাল আর হালু মোল্লার বুদ্ধির লড়াই। গ্রামের লোকেরা নাম দিল চালাকি বনাম বুদ্ধি!

(ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কষ্টের জীবনী: পরিস্থিতি যেমনই হোক, সাফল্য আমাকে ছিনিয়ে আনতে হবেই) এটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন

ধাপ ২: হালু মোল্লার নতুন কৌশল

এক সপ্তাহ পরে হালু মোল্লা ঠিক করল, গোপালকে একবার বড় চমকে দিবে। ভাবল, গ্রামের চতুর ছেলে গোপালকে তার নিজের কৌশল দিয়ে হারানো যায়। মোল্লা বাজারে বড় একটা বোঝাই পেঁয়াজ নিয়ে দাঁড়াল। লোকজন জিজ্ঞাসা করল, মোল্লা, আজ আবার কী করছেন?

মোল্লা বলল, এই পেঁয়াজের বোঝাই আমি বিক্রি করব একটিমাত্র এক টাকায়, তবে যিনি চতুর, তিনবার আমাকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেও উত্তর দিতে পারবে না, সে কিনতে পারবে না।
গ্রামের লোকেরা আশ্চর্য। আবারও গোপাল আগ্রহী হয়ে দাঁড়াল।

প্রথম প্রশ্ন হলো এই পেঁয়াজের মধ্যে কয়টি পেঁয়াজ আছে?
গোপাল ধ্যান দিয়ে বলল, পেঁয়াজের সংখ্যা ঠিক বলব না, কারণ দেখছি কিছু পেঁয়াজে তেল লেগেছে, কিছু নরম।

মোল্লা ভেবেছিল, গোপাল হেরে যাবে। কিন্তু গোপাল হাসি চেপে বলল, তুমি যদি নিজের চোখে গণনা করো, তাহলে নিশ্চয় জানবে!

দ্বিতীয় প্রশ্ন পেঁয়াজগুলো সবই একই রঙের?
গোপাল বলল, না, কেউ হালকা লাল, কেউ একটু গাঢ় লাল। আর কেউ কিন্তু দাগানো।
মোল্লা একটু রেগে গেল, বলল, ঠিক আছে, শেষ প্রশ্ন। সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ কোনটা?
গোপাল মুচকি হাসল, সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ হলো যা কেউ অন্ধকারে হাত দিয়ে ধরতে পারবে না। কারণ চোখে বড় হলেও হাতের আকার অনুযায়ী ছোট হতে পারে।

গ্রামের সবাই হেসে ফেটে পড়ল। মোল্লা বুঝল, এবারও গোপাল তার কৌশল বুঝিয়ে দিয়ে লোকসান এড়ালো।

হালু মোল্লা মনে মনে ভাবল, এই ছেলে তো আমার চালে চুরি দেখল, এবার আমাকে আরও মজার কিছু করতে হবে।

এভাবেই গোপাল আর হালু মোল্লার চালাকি–বুদ্ধি লড়াই দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠল।

ধাপ ৩: গোপালের পাল্টা পরিকল্পনা

হালু মোল্লা যতই চেষ্টা করুক, গোপাল প্রতিবারই তার কৌশল টপকে যাচ্ছিল। একদিন গোপাল ঠিক করল, এবার নিজেই মোল্লাকে একটা শাস্তি দেবে, তবে হাসি-ভরা উপায়ে।

সে গ্রামে একটি বড় ঝুড়ি কাচা ফল নিয়ে এসে বাজারে দাঁড়াল। হালু মোল্লা তখনও ভাবছিল, এই ছেলে আবার কী করে আমাকে ঠকাবে? গোপাল চিৎকার করে বলল, এই ফলের মধ্যে আছে এমন এক ফল, যা খেলে জলে ভেসে যাবে, আর খেলে না খেলে থাকবে!

মোল্লা অবাক হয়ে বলল, এমন কী ফল?
গোপাল বলল, যে ফল তুমি এখন ধরছো, সেটিই। যদি তুমি ধরো, তা হলে তুমি ভেসে যাবে, ধরো না, তাহলে থাকবে।

মোল্লা ভেবেছিল এটা সহজ, হাত দিয়ে ধরল। হঠাৎ গোপাল সবার সামনে বলল, ধরা হল! এখন তোমাকে আরেকটি চ্যালেঞ্জ দিতে হবে।

মোল্লা ঘাবড়ে গেল। গোপাল একটি ছোট পাত্রে পানি ভরে দিল এবং বলল, এই ফলগুলোকে এখন পানিতে রাখবে, কোনটা ডুবে, কোনটা ভেসে থাকবে তা ঠিক করতে হবে।

মোল্লা পানি ভরা পাত্রে ফলগুলো রাখল। সব ফল ভেসে গেল। গোপাল হেসে বলল, দেখো, তুমি ভাবলে যে তোমার বোঝাপড়া জেতাবে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ফলগুলো ভেসে আছে, কারণ তুমি ধরলে।

গ্রামের লোকেরা হেসে হেসে কুটিকুটি হল। মোল্লা লজ্জায় মাথা নুইয়ে নিল। সে বুঝল, গোপাল তার চালাকি বুঝে ফেলেছে।

এই ধাপে গোপালের বুদ্ধি এবং মোল্লার লজ্জা এক সঙ্গে ফুটে উঠল। গ্রামের সবাই আবারও হাসিতে মাতোয়ারা হলো।

ধাপ ৪: হালু মোল্লার নতুন কৌশল

হালু মোল্লা ভাবল, এবার গোপালকে সরাসরি কৌশল দেখিয়ে জেতা যাবে না। তাই সে বাজারে নিয়ে এল এক বড় ঝুড়ি। এবার ঝুড়িটা ভর্তি ছিল ময়দা আর ছোট ছোট পাঁঠা–সব মিশিয়ে। মোল্লা ঘোষণা করল, এই ঝুড়ি থেকে যিনি পাঁঠা আলাদা করতে পারবেন, তিনি পাবেন আমার আজকের পুরস্কার!

গোপাল এগিয়ে এল। সে ঝুড়ি ঘিরে ঘিরে দেখল, ময়দা আর পাঁঠা সব মিলেমিশে। মোল্লা হেসে বলল, তুমি যদি সত্যিই চালাক হও, তিন মিনিটের মধ্যে আলাদা করতে হবে।

গোপাল মনে মনে হেসে বলল, এবার সহজ ট্রিক! সে প্রথমে পাঁঠাগুলো টোকা দিয়ে ছুঁলো না, বরং কিছুটা ময়দা ঝাড়ল। তখন পাঁঠাগুলো হঠাৎ চোখে পড়ল। গোপাল বুদ্ধি করে বলল, মোল্লা, আমি তোমার চ্যালেঞ্জ পুরোপুরি শেষ করেছি, তবে চাই তুমি প্রথমে আমাকে বলতে দাও, এটা আসলে কতোটা কঠিন ছিল।

মোল্লা বিস্মিত হয়ে বলল, তুমি তো একদম আমার কৌশল টপকে গেল!
গোপাল হেসে বলল, মোল্লা, কঠিন চ্যালেঞ্জ মানেই বুদ্ধি দেখানো, কিন্তু বুদ্ধি ছাড়া কেউ জেতে না।

গ্রামের সবাই খুশি হয়ে বলল, গোপাল সত্যিই অসাধারণ! মোল্লা চুপচাপ দাঁড়িয়ে হেসে বলল, ঠিক আছে, এবার সত্যিই নতুন কিছু করতে হবে।

এই ধাপে স্পষ্ট হলো, গোপালের বুদ্ধি আর মোল্লার চালাকি একে অপরকে চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে, আর গ্রামের সবাই আনন্দে মেতে উঠছে।

( বিশ্বের সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর ১০টি দেশের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)

ধাপ ৫: মোল্লার নতুন ধাঁধা

হালু মোল্লা এবার ঠিক করল, এবার সরাসরি খেলার মাধ্যমে গোপালকে হতাশ করা যাবে না। তাই সে বাজারে নিয়ে এল এক বড় চুলোর পাত্র এবং ভরা রাখল নানান ধরনের শস্য—চাল, ডাল, ভুট্টা। মোল্লা ঘোষণা করল, যে ব্যক্তি আমার ধাঁধার উত্তর দিতে পারবে, সেই পাত্র থেকে নিজের পছন্দমতো শস্য নিতে পারবে।

গ্রামের লোকেরা জমে গেল। মোল্লা বলল, আমি পাত্রে একটি বিশেষ শস্য লুকিয়েছি, যা শুধু ধাঁধার উত্তর জানা মানুষই চিনতে পারবে। ধাঁধা হলো কোনটি সবসময় ঘরে থাকে, তবু কেউ ধরি না, সবসময় থাকে, তবু দেখতে পাওয়া যায় না?

লোকেরা মাথা চুলকাতে লাগল। কেউ বলল, মোল্লা, এটা কি আসলেই সম্ভব?
গোপাল মুচকি হাসল। সে বলল, মোল্লা, উত্তর হলো ছায়া। কারণ ছায়া সবসময় থাকে, কিন্তু কেউ ধরতে পারে না।

মোল্লা হেসে বলল, সত্যি কথা! তুমি ধাঁধার উত্তর দিতে পেরেছ!
গোপাল পাত্র থেকে নিজের পছন্দের শস্য তুলে নিল। গ্রামের সবাই অবাক হয়ে বলল, এতো সহজ ধাঁধা, কিন্তু কেউ ভাবল না!

মোল্লা তখন বুঝল, গোপালের বুদ্ধি সত্যিই অসাধারণ। সে ভাবল, এই ছেলে আমার চালে কেবল হাসি আর চতুরতা দেখায়। এবার তো আরও নতুন কৌশল দরকার।

এভাবেই গোপাল আর মোল্লার চালাকি–বুদ্ধি লড়াই দিনে দিনে আরও মজাদার হয়ে উঠল।
গ্রামের লোকেরা এ দৃশ্য দেখে আনন্দে মাতোয়ারা। কেউ বলল, গোপাল ছাড়া এই বাজারের মজা চলে না!

ধাপ ৬: গোপালের চূড়ান্ত কৌশল

হালু মোল্লা এবার আরও চতুর হয়ে উঠল। সে ভাবল, এবার গোপালকে সরাসরি ঠকানো যাবে না, তাই সে বাজারের মাঝখানে এক বিশাল ঝুড়ি নিয়ে দাঁড়াল। ঝুড়িটিতে ভরা ছিল নানা ধরনের ফল—আপেল, কলা, পেঁয়াজ, আলু, আর কিছু অচেনা সবজি। মোল্লা ঘোষণা করল, এই ঝুড়ি থেকে যিনি একমাত্র বিশেষ ফলটি ধরবেন, সে পাবেন আজকের পুরস্কার। তবে, ফলটি শুধুমাত্র সেই বুদ্ধিমানের হাত ধরতে পারবে, যিনি আমার শেষ ধাঁধার উত্তর জানেন।

গ্রামের লোকেরা উৎসাহে ভীড় জমাল। মোল্লা ধাঁধা দিল কোনটি সবসময় থাকে, তবু কেউ ধরতে পারে না, সবসময় থাকে, তবু দেখতে পাওয়া যায় না?
গোপাল মুচকি হাসল। সে বলল, উত্তর হলো ছায়া
মোল্লা কিছুতেই আশা করতে পারেনি, এই বুদ্ধিমানের ছেলে আবারও তাকে হারাল। গোপাল পত্র থেকে নিজের পছন্দের ফল তুলল একটি বড় লাল আপেল।

মোল্লা তখন বুঝল, যে বুদ্ধি ও হাস্যরস মিলে মানুষের মন জয় করে, সেই শক্তিকে কোন ধাঁধা বা কৌশল থামাতে পারে না। সে হাসি চেপে বলল, গোপাল, তুমি সত্যিই অসাধারণ। এবার আমি তোমার থেকে শিক্ষা নেব।

গ্রামের সবাই আনন্দে মাতোয়ারা। গোপাল মোল্লাকে কেবল হারাননি, বরং সবাইকে শিখিয়েছে, চালাকি ও বুদ্ধির মধ্যে যদি হাস্যরস থাকে, তা মানুষের মনের আনন্দ এনে দেয়।
এভাবেই গোপাল আর হালু মোল্লার লড়াই শেষ হলো—একটি মজার, হাস্যরসপূর্ণ উপাখ্যান হিসেবে, যা গ্রামের লোকদের গল্পের অংশ হয়ে রইল।

এরকম বিষয়ে আরোও জানতে এই ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন। এই ওয়েবসাইটে প্রতিদিন নিয়মিত নতুন নতুন বিষয় আপডেট হয়। এছাড়া এই ওয়েবসাইটে বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট রয়েছে যেমন: বিভিন্ন বস্তুর আবিষ্কার ঐতিহাসিক স্থানসমূহ, ছোটদের মজার রূপকথার গল্প, সাফল্য নিয়ে বিখ্যাত মনীষীদের উক্তি এবং স্ট্যাটাস, বিখ্যাত মনীষীদের সাফল্য জীবনকাহিনী, মজার মজার জোকস ও কৌতুক, ভূতের গল্প, শিক্ষনীয় গল্প, প্রেমের কাহিনী, কাব্য উপন্যাস,শরীর সুস্থ রাখার গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারদের টিপস, ইসলামিক হাদিস , ইসলামের ইতিহাস ইত্যাদি। এই ওয়েবসাইটের https://www.mahadistoryworld.com/

Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url
whatsapp" viewbox="0 0 512 512" stroke="none" fill="currentColor">